কমল হাসান, একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক; মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই অভিনয় শুরু করেন এবং আশির দশকে নায়ক হিসেবে অভিষিক্ত হন। অভিনেতার বাইরে তিনি একাধারে একজন প্রযোজক ও পরিচালক। সেই কমল হাসানের মেয়ে শ্রুতি হাসানও এখনকার সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা। রূপে,গুণে, অভিনয়ে কোন অংশে যেন কারও থেকে কম নয়।
সুযোগের জন্য কখনও তাকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়নি। বরংচ কমল হাসানের মেয়ের কাছে সুযোগ এসেছিল যেচেই। নায়িকা হিসেবে অভিষিক্ত হবার আগে বহু ছবিই ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। সেরা নায়িকার দৌড়ে না থেকে জীবনকে উপভোগ করতেই বেশি ভালবাসেন শ্রুতি হাসান।
কমল হাসান ও সারিকার বড় মেয়ে শ্রুতি হাসানের জন্ম হয় ১৯৮৬ সালের ২৮ জানুয়ারি। শ্রুতির যখন জন্ম হয় তখনও কমল হাসানের সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রী বাণী জয়রামের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়নি। কমল এবং সারিকা ছিলেন লিভ ইন সম্পর্কে। শ্রুতির বয়স যখন ২ বছর তখন তার বাবা-মা বিয়ে করেন। শ্রুতি বয়স যখন ১৮ তখন তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। দুই মেয়ে শ্রুতি এবং অক্ষরাকে নিয়ে আলাদা হয়ে যান সারিকা। তিনি আর বিয়ে করেননি। তবে কমল হাসন লিভ ইন করেছেন নায়িকা গৌতমীর সঙ্গে। যদিও গৌতমীর সঙ্গেও শ্রুতি এবং অক্ষরার সম্পর্ক অনেকটাই ভালো।
চেন্নাইয়ের স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে শ্রুতি মুম্বাইয়ের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ কলেজে ভর্তি হন। স্কুলে অবশ্য শ্রুতি ‘পূজা রামচন্দ্রন’ ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। কারণ তিনি চাননি সহপাঠীরা তাকে স্টারকিড হিসেবে চিনুক।
মনস্তত্ত্বের ছাত্রী শ্রুতি স্কুলের পর পাড়ি দেন ক্যালিফর্নিয়া। সেখানে আর মনস্তত্ত্ব নয়। মিউজিশিয়ানস ইনস্টিটিউটে সঙ্গীতশাস্ত্রের ছাত্রী বনে যান তিনি। সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন শৈশবেই। বাবা কমল হাসানের পরিচালনায় তিনি প্রথম অভিনয় করেন ‘হে রাম’ সিনেমাতে। তবে নায়িকা হিসেবে তার অভিষেক ঘটেছে ২০০৮ সালে, ইমরান খানের বিপরীতে ‘লাক’ ছবিতে। তার আগে বেশ কিছু ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ শ্রুতি ফিরিয়ে দিয়েছেন বলেই জানা যায়।‘লাক’ ছবির নায়ক ইমরান ছিলেন শ্রুতির শৈশবের বন্ধু। তিনিই পরিচালকের কাছে শ্রুতির নাম প্রস্তাব করেন। পরে সম্পূর্ণ চিত্রনাট্য পড়ে তবেই রাজি হন শ্রুতি। ছবির অ্যাকশন-দৃশ্যের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছিলেন তিনি। কিন্তু বক্স অফিসে ‘লাক’-এর ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল না। নজর কাড়তে ব্যর্থ হন শ্রুতিও। বেশির ভাগ চলচ্চিত্র সমালোচকই তাকে ‘সিন্থেটিক’ বলে অভিহিত করেন। বিরূপ বিশেষণ থেকে শ্রুতি রেহাই পাননি তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ছবি ‘দিল তো বাচ্চা হ্যায় জি’তেও। মধুর ভান্ডারকরের এই ছবি বক্স অফিসে তুমুল সাফল্য পেলেও শ্রুতির সাফল্য অধরাই থেকে যায়।